Thursday, 24 September 2015

মন্ত্রীর সাথে সয়তানি

এক মন্ত্রী মৃত্যুর পর পরজগতে গেলো।
সে যখন স্বর্গে ঢুকবে,(যাই হোক ধরে নেই সে কোনোভাবে স্বর্গে ঢুকবে) তখন দেবতা তাকে বলল,”স্বর্গে কিছু সংস্কার চলছে;তুমি ২দিন শুধু নরকে ঘুরে আসো;এরপর স্বর্গে ঢুকো”
মন্ত্রী রাজি হল।
নরকে শয়তান তাকে সাদর আমন্ত্রণ জানালো। এরপর সে তাকে নরক ঘুরে দেখাতে লাগলো
মন্ত্রী অবাক হয়ে দেখতে লাগলো যে নরক অনেক সুন্দর।খুবই আরামের বাবস্থা,সুন্দর সুন্দর প্রাসাদ থাকার জন্য।
খেলাধুলার জন…্য পুল,গলফ মাঠ আরও অনেক কিছু।অনেক সুস্বাদু পানীয়,খাবার দাবারের বাবস্থা। আর অসংখ্য সুন্দরী অপ্সরী।
মানুষ অনেক আরামে আছে ওখানে
২ দিন পর দেবতার কাছে মন্ত্রী বলল যে সে নরকেই থাকতে চায়।
দেবতা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,”তুমি সত্যি ওখানে থাকতে চাও?’
মন্ত্রি,”হ্যাঁ”
দেবতা রাজি হল।
কিন্তু এরপর মন্ত্রী নরকে গিয়ে দেখল যে নরক পুরো অন্যরকম।কোন সুন্দর জায়গা নেই। শুধু আগুন আর কয়লা। মানুষজনকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে।দৈত্যরা মানুষজনকে শাস্তি দিচ্ছে।অসংখ্য সাপ আর হিংস্র প্রাণী ঘুরে বেড়াচ্ছে;খুবই কুৎসিত আর জঘন্য জায়গা।
মন্ত্রী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো শয়তানকে “নরকের এই হাল কেন?আগে আমি কি দেখলাম!!”
শয়তান হেসে বলল,” আরে ওইটা তো ছিল একটা ক্যাম্পেইন। তোমরা যেমন নির্বাচনের আগে মানুষকে স্বর্গের স্বপ্ন দেখিয়ে পরে নরক উপহার দাও;আমিও তাই করেছি। তোমার তো এটা বুঝার কথা................''

Wednesday, 23 September 2015

ব্রেকআপের পর ছেলেরা

।। ব্রেকআপের পর ছেলেরা ।।

ব্রেকআপের পর অনেকেই অনেক ভেঙে পড়ে। মেয়েরা খুব বেশী ভেঙে পড়লেও ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশ তাড়াতাড়ি সামলে উঠতে পারে, আর যেসব ছেলেরা সত্যি সত্যি ভালোবেসে থাকে, তাদের জীবণে বেশ অনেকটা সময়ই চলে যায় এ ব্রেকআপের সাতকাহন গাইতে গাইতে, ব্রেকআপের পর বেশ কিছুটা সময় বেশ গুরত্বপূর্ণ। তারা সেসময় যেসব পর্যায়ের ভিতর দিয়ে যায়, তারই কিছু তুলে ধরছি আজ কয়েকটি পর্যায়ে

১ম পর্যায়, “আমার মন মানে না…”:এই পর্যায়টা ব্রেক আপের সবচেয়ে ইমোশনাল পর্যায়। একই সাথে গুরুত্বপূর্ণও – কেননা এই সময়ে নেয়া যে কোন সিদ্ধান্ত আলটিমেটলি জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।ব্রেক আপের এ পর্যায়ে কারো ভেতর থেকে যে ইমোশনগুলো বেরিয়ে আসে তা একদমই Raw ইমোশন। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই ইমোশনটা বেরোয় বুক ফাটা কান্না বা তীব্র মানসিক বেদনার রূপে। তবে ব্যতিক্রমী কারো কারো ক্ষেত্রে ব্রেকআপ স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে যেটাই হোক না কেন, তা স্বাভাবিকের বাইরে, এর সবই আবেগের বশে।যাদের জন্য ব্রেকআপটা কষ্টের তাদের মন মানেনা… “কেন আমিই এতো দুর্ভাগা” – এই প্রশ্ন বারবার ফিরে আসে মনে।ব্রেক ঠিক পরপর এই তাৎক্ষণিক পর্যায়টিতে অধিকাংশ মানুষ ৩টি কাজের একটি করে:

ক. নিজের ক্ষতি করে (আত্মহত্যা, ড্রাগস ইত্যাদি)

খ. যে মেয়ের সাথে রিলেশন ছিলো তার ক্ষতির চেষ্টা করে (ফেইসবুক/ইমেইল হ্যাক, নেটে বাজে ছবি ছাড়া, মোবাইল নাম্বার ম্যানিপুলেশন)

গ. যার কারণে এই ব্রেক আপ (অন্য আরেক ছেলে হতে পারে) তার ক্ষতির চেষ্টা করে।

এবং আরেকটি টাইপ আছে যারা এই ৩টির একটিও করে না – They just let it go. এরা আবার ৩ প্রকার:

ক. মন খারাপ করে থাকার দল

খ. ‌’এই বেশ ভালো আছি’ বেশ ধরা দল

গ. ঘন্টায় ঘন্টায় নতুন রিলেশন আর ব্রেকআপের কারণে এদের মনে ব্রেকআপ আর নতুন করে কোন অনুভূতির জন্ম দেয় না – সেই দল (সঙ্গতঃ কারণেই এই পোস্টে তাদের কথা আলোচনা করা হয়নি)

উপর্সগ:

১. শুধু ওকে ফোন দিতে ইচ্ছে করে/দেখা করতে ইচ্ছে করে/মনে হয় এখনই গিয়ে দেখা করি – যদি জানা আছে তাতে সিদ্ধান্ত বদলাবে না।

২. নিজে থেকেই নিজের দোষ/ত্রুটি বের করে ব্রেকআপের পিছনে নিজের দোষগুলো খুঁজে বের করা – যদিও হয়তো আদতে নিজের কোন দোষই নেই।

৩. ওর রেখে যাওয়া স্মৃতি চিহ্নগুলো হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখা… মন আরও খারাপ করা। কেউ কেউ অবশ্য এগুলো নষ্ট করে ফেলে।

কমন ডায়ালগ:

১. “আমার তো কোন দোষ ছিলো না… তাহলে কেন….?

২. “সব মেয়ে এক…” (এটা একটা বিশেষ টাইপের ছেলেরা বলে)


৩. “আমি আর কখনও রিলেশন করতে পারবো না…”অত্যন্ত ইমোশনাল এ পর্যায়টাকে ঠিক শব্দে প্রকাশ সম্ভব নয়। যতো কম বলে শেষ করা যায় ততোই ভালো। তাই পরের পর্যায়ে চলে যাচ্ছি।

২য় পর্যায়, সান্ত্বনা: আপনার ফ্রেন্ডকূল এবং পরিচিতরা যারা আপনার রিলেশনের ব্যাপারে জানতো তারা এ পর্যায়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে আপনাকে সান্ত্বনা দিতে। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, মনে মনে আপনার বেশির ভাগ বন্ধুই (স্পেশালি যাদের রিলেশন আছে) কিন্তুই খুশি। খুশি এ জন্য যে – “যে এটলিস্ট তারা আপনার মতো এতো দুর্ভাগা না…” এটা মানুষের আদি ধর্ম। অপরের বিপদের কথা চিন্তা করলে সচেতন বা অবচেতনভাবে আমাদের মন আনন্দ পায়।”জাস্ট ঐ কষ্টকর পরিস্থিতিতে সে নেই” – এই চিন্তাটাই মনে আনন্দের খোরাক জোগানোর জন্য যথেষ্ট। এটা খারাপ কিছু নয়। এটা মানুষের ধর্ম। ইনফ্যাক্ট এটার কিছু ভালো দিক আছে। যেমন ধরুন, যেদিন আপনার ব্রেকআপের কথা আপনার ফ্রেন্ডরা শুনলো, পরের বার তাদের গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের সাথে আলোচনায় এ প্রসঙ্গটা একবার হলেও অন্ততঃ উঠবে। তখন তারা
একে অপরকে প্রমিস করবে – তারা কখনও এভাবে বিচ্ছেদ ঘটাবে না। রিলেশন যে পর্যায়েই থাকুক না কেন – তারা আবারও নতুন করে অনুধাবন করবে, একে অপরকে পেয়ে তারা কতোটা লাকি। নিজেদের রিলেশনের অবস্থা নিয়ে শঙ্কিত ছিলো, এমন কাপলদের নিজেদের সমস্যা আর কিছু বলে মনেই হবে না। প্রিয় বন্ধুর ব্রেকআপের পর এ সময়টায় গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড হঠাৎ করেই একটু বেশিই সুইট হয়ে যেতে পারে – তবে এটা টেম্পোরারি। এর কোন স্থায়ী প্রভাব নেই।যাই হোক এ পর্যায়ে ফ্রেন্ডকূল ও পরিচিতদের সান্ত্বনা আর উপদেশ বাণীতে সিক্ত হবেন আপনি -

১. “যা হয়েছে ভালো জন্য হয়েছে…” (হ তোরে কইসে!)

২. “জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না…”

৩. “এটা ক্যারিয়ার গড়ার সময়…” (নরমালি এটা বন্ধুরা না, স্বজনেরা বলে)

৪. “নিশ্চয়ই তোমার কপালে জন্য এর চাইতেও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে…”

৫. “থাক দোস্ত… বাদ দে…”

৬. “ফ্রেন্ডদের সাথে সময় কাটাও…”

৭. “ব্যাপার না… সব ঠিক হয়ে যাবে…”


৮. “চল বাইরে চল…”

আপনার রিলেশন সম্পর্কে আপনার ফ্রেন্ডদের আগে না বলা কিছু তথ্যও উঠে আসতে পারে এ পর্যায়ে -

১. “এমনিতেও এই রিলেশন নিয়ে তোর পরে সমস্যা হইতো…”

২. “ওর চাইতে হাজার গুণ বেটার মেয়ে তুই পাবি…” (৫ মাস আগেও “তোদের দেখে ঈর্ষা হয় বলার পর”)

৩. “এমনিতেও ওর অনেক সমস্যা ছিলো…”

৪. “আমার কেন জানি আগে থেকেই মনে হচ্ছিলো রিলেশনটা টিকবে না…”

৩য় পর্যায়, নিজেরে বুঝাই: ব্রেক আপের এই পর্যায়টা একান্তই নিজের। নিজের জীবন, ক্যারিয়ার সব কিছুই নতুন করে শুরু করার একটা প্রত্যয় এই স্টেজে জন্মায়। এ পর্যায়ে একটা ছেলে এমন অনেক কিছুই করবে, যা সে সাধারণ অবস্থায় কখনোই করতো না। এমন অনেক কাজ সে করবে যা এইতো ক’দিন আগেও তার কাছে ছ্যাবলামি মনে হতো। এমন অনেক মানুষ যাদের সাথে দীর্ঘদিন কোন যোগাযোগ ছিলো না/ বা অনেকটা ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গিয়েছে তাদের সাথে যোগাযোগ বাড়তে পারে। পুরো ব্যাপারটাই আসে জীবনে সামগ্রিক পরিবর্তনের একটা চিন্তা থেকে।

৪র্থ পর্যায়, বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো: এ পর্যায়ে সুযোগ পেলেই বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর একটা প্রবণতা দেখা যায়। বাসার বিভিন্ন কাজে এবং ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে অন্তরঙ্গতা বাড়ে। পুরো দুনিয়া কেমন একটা ‌’মায়ার চশমা’ দিয়ে ফিল্টার হয়ে চোখে এসে ধরা দেয়। মানুষের উপকার করতে ইচ্ছে করে। মানুষের সাথে একটু বেশিই নরমভাবে কথা বলার প্রবণতাও দেখা যায়।

উপসর্গ:

১. বন্ধুবান্ধবদের সাথে বের হয়ে তাদের বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ডেদের মধ্যে রিলেশনের অন্তরঙ্গতা দেখে খুব প্রচন্ড ঈর্ষা ও অস্বস্তি।

২. কথায় কথায় বন্ধুদের কাছে – “ইশ ও এইটা করতো…”, “আই উইশ ও এইটা দেখতো…” বা “আমি আর ও প্রায়ই এটা করতাম…” – টাইপের কতাবার্তা।

৩. সুযোগ পেলেই মানুষকে নিজের ব্রেকআপের কথা জানানো, সহানুভূতির আশায় নয় – এটার মধ্যে কোথায় যেন ক্রেডিট নেয়ার মতো বিষয় আছে।

৪. “জীবনে অনেক কিছু দেখে ফেলেছি…” টাইপের মানসিকতা।

৫. ফেইসবুকে নিজের জীবনদর্শন তুলে ধরে স্ট্যাটাস দেয়া। কারো কারো স্ট্যাটাস দেখলে মনে হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে।

সূত্র ঃ khobor24.com

৬. দাড়ি রাখা।

৫ম পর্যায়, আমি যেন কার আশায আশায় থাকি: এতোদিনে আপনার ব্রেকআপের ঠিক পরপর টাটকা ক্ষত অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। তবে পরিচিত যায়গা, পরিচিত মানুষ দেখলে বুক ফাঁকা ফাঁকা লাগে। পরিচিত জায়গা দিয়ে কোথাও যাওয়ার সময় আগের কথা মনে পড়ে। সাথে একটা ভয় কাজ করে যদি দেখা হয়ে যায় – তাহলে কি হবে? আবার মনে মনে ঠিকও করে ফেলেন দেখা হলে কি করবেন। যদিও ভয় পাচ্ছেন দেখা হওয়ার বিষয়টা চিন্তা করে, আবার কাইন্ড অফ যেন চাচ্ছেনও দেখা হোক।

৬ষ্ঠ পর্যায়, নতুন করে আবারও: ব্রেকআপের স্মৃতি মনে আর অবশিষ্ট নেই তেমন একটা -শুধু খুব অকেশনালি মনে পড়ে। মনে মনে আপনি ঠিক করে ফেলেছেন ওর সাথে সামনে কখনও দেখা হলে (তা নতুন বয়ফ্রেন্ড সহই হোক না কেন) আপনি ওকে ওর নতুন লাইফের জন্য কনগ্র্যাচুলেট করবেন – যেন এতোটুকু মানসিক শক্তি আপনি অর্জন করেছেন।আপনার মধ্যে মেয়ে দেখলেই আগ্রহ জন্মাচ্ছে। বন্ধুকূলকেও জানিয়ে দিয়েছেন আপনি রেডি – হয়তো খুঁজতেও বলে দিয়েছেন।

উপসর্গ:

১. অনলাইনে/ফেইসবুকে বা ফ্রেন্ডের মাধ্যমে নতুন মেয়েদের সাথে পরিচয় হওয়া মাত্র তাৎক্ষণিকভাবে রিলেশনের জন্য মনস্থির করা। (যদিও আপনি নিজেও জানেন ৯৯% চান্স যে সেটা কাজে আসবে না)

২. ডার্টি জোকস/গালি প্রিয়তা – যদিও আপনি এসবের জন্য মোটেও বিখ্যাত নন।

৩. নিজের মধ্যে সাময়িক লুইচ্চামি গ্রো করা।

৪. হঠাৎ করে আপনার মনে হচ্ছে রিলেশনে থাকা অবস্থায় জগৎটা অনেক সহজ ছিলো, সবকিছু খুব নিশ্চিৎ ছিলো – হাত বাড়ালেই আরেকটা হাতের ছোঁয়া, চাইলেই একটা কাঁধে মাথা রাখা। কিন্তু এখন রিলেশন ভেঙে যাওয়াতে জগৎটাকে অনেক কঠিন মনে হচ্ছে। আবারও নতুন করে রিলেশন, আবারও নতুন করে শুরু আদৌ হবে কিনা – ধারণাটাকে অলরেডি আপনি প্রশ্নবিদ্ধ করতে শুরু করেছেন। ঠিক প্রথম রিলেশনটার আগে যেমনটা মনে হয়েছিলো আপনার..........


.........।।।

ব্রেকআপের পর মেয়েরা

একটি সম্পর্ক যখন গড়ে ওঠে তখন তা অনেক ভালবাসা আর প্রত্যাশা নিয়েই শুরু হয়। তারপর তা সময়ের ধারায় চলতে থাকে। কিন্তু সব সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় খুব কমই। কোন না কোন কারণে সেখানে দেখা দেয় ফাটল এর পরিণতি গড়ায় ব্রেকআপে গিয়ে। আমাদের আগের একটি বিষয় ছিল ব্রেকআপের পর ছেলেদের নিয়ে। সেখানে আমরা বলেছিলাম মেয়েরা অনেক বেশি ভেঙে পড়লেও তা সামলে ওঠে তাড়াতাড়ি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেক মেয়েই সামলে উঠতে হিমশিম খাচ্ছেন। কেননা মেয়েরা অনেকটাই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে থাকেন। ফলে তারা সহজেই তাদের কষ্টের কথা কারো সাথে শেয়ার করতে চাননা একেবারেই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছাড়া। ফলে তাদেরকে অনেক পর্যায় পার করতে হয়। দেখে নেয়া যাক মেয়েদের ব্রেকআপের পরের পর্যায়গুলো কেমন হয়।

ব্রেকআপের ঠিক পরবর্তী পর্যায়:

এই সময়টা একটা মেয়ের জীবনের সব চাইতে খারাপ সময়। ব্রেকআপটা তার নিজের ইচ্ছায় হোক বা না হোক। সে অনেক ইমোশনাল থাকে। অনেকেই এ ক্ষেত্রে তীব্র ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে নিয়ে নেন ভুল সিদ্ধান্ত। সম্পর্ক ভেঙে চলে আসার পর হয়ত বাড়িতে জানিয়ে দেন তিনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত। তারপর ধীরে ধীরে নিজের ভুল বুঝতে পারেন কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে গেছে বেশ। আবার অনেকেই এমন সিদ্ধান্ত না নিলেও ভেঙে পড়েন একেবারেই। নিজের জীবনের মূল্যই নেই এমনটিও ভাবেন অনেকে। চেষ্টা করেন আত্মহননেরও। নিজেকে গুটিয়ে নেন নিজের মধ্যে। ঘরের চার দেয়ালকেই বেছে নেন আশ্রয়ের জন্য। রাগে-দুঃখে সারাক্ষণ চলে কান্নাকাটি, নাওয়া-খাওয়া ভুলে অতীতের স্মৃতি আঁকড়ে পড়ে থাকতে ভালবাসেন। আর অন্য কোন মেয়ের কারণে রেলেশন ভেঙে গেলে সেই মেয়ের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করেন। মেয়েটি দেখতে কেমন বা তার আর সব আচরণ কেমন যার কারণে তিনি এতটা নিচে নেমে এলেন তাকে দেখার ও জানার ইচ্ছা অনুভব করেন। এক্ষেত্রে কাজে লাগান তাদের বন্ধু-বান্ধবদের। যাতে তারা সেই মেয়ে সম্পর্কে সব খবরাখবর এনে দিতে পারেন।

এ তো গেল লক্ষণগুলো। তারপর সেই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা বেরিয়ে আসতে ভাবেন তার সাথে একটু যদি ফোনে কথা বলতে পারতেন। আবার অনেকে হয়ত বার বার ফোনে মিস কল দেন বা একটু খানি কন্ঠ শুনতে চান। পুরনো প্রেমিকের দেয়া উপহারগুলো নেড়েচেড়ে দেখতে চান। ফেসবুকে একাউন্ট থাকলে প্রতিদিন একবার করে সেই প্রোফাইলে ঢু মারেন, ছবি দেখেন। প্রোফাইলে ঢু মারার প্রধান উদ্দেশ্য অন্য কোন মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক হলো কিনা তা খুঁজে দেখা বা রিলেশনশিপ স্টেটাস দেখা।

অনেকেই শান্তনা খুঁজে নেন সম্পর্ক ভাঙার পেছনের কারণ খুঁজে। খুজে খুজে বের করেন দোষ তো তার নিজের ছিলনা। পজেটিভ দিকগুলো না দেখে নেগেটিভ গুলো চিন্তা করে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকার অভিনয় করেন অনেকেই।

এ সময়ের ডায়ালগ-

১. “যা হয়েছে ভালোর জন্য হয়েছে, ”এ সম্পর্ক এমনিতেই আমার বাসা থেকে মেনে নিতনা”।

২. সব ছেলেরাই এমন, তাদের ভালবাসা এ্ক সময় কমে যায়, ভালোই হয়েছে একে বিয়ে করিনি”।

৩. “ও আমার সাথে সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে? তাতে কি? আমিও দেখবো ও আমার চাইতে কোন ভালো মেয়ে পাই কিনা”।

৪. “আমি বিয়ে করে আমার জামাই নিয়ে ওর চোখের সামনে ঘুরবো”।

বন্ধুদের স্বান্তনা:

এসময় বন্ধুরা যারা রেলিশনের ব্যাপারে জানতো তারা আসে স্বান্তনা দিতে। স্বান্তনা দেয়ার বদলে অনেকেই আরো জ্বালিয়ে যান তুষের আগুন। তাদের ডায়ালগগুলো হয় এমন-

১. “এইটা একটা কথা হলো? ও তোর সাথে এমন করবে কেন”?

২. “তুই চিন্তা করিসনা, আমি ওর সাথে একবার কথা বলে দেখবো”।

৩. “আরে বাদ দে, সব ছেলেরাই এমন”।

৪. “ এইজন্যই তো ওরে কদিন থেকে ঐ মেয়েটার সাথে ঘুরতে দেখছিলাম”।

৫. “যা হয় ভালোর জন্যই হইছে”।

নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা:

ব্রেকআপের ইমোশনাল পর্যায় পার করার পর মেয়েরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
তারা চায় সব সময় ব্যস্ত সময় কাটাতে যাতে পুরনো স্মৃতিগুলো সহজে ভুলে থাকতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ হয় শপিং। অযথা শপিং করে টাকা-পয়সা খরচ করতে তারা পিছপা হয়না। তারপর বিউটি পার্লারে ছোটেন নিজের রুপ চর্চায় ব্যস্ত থাকতে। অনেকেই নানা রকম কোর্স করে নিজেকে ব্যস্ততায় রাখতে চান।

বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো:

অনেকেই হয়তো সম্পর্ক চলাকালীন বন্ধুদের সময় দিতে পারতেন না। এই সুযোগে আবারো বন্ধুদের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করেন। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ঘুরাঘুরিতে মেতে ওঠেন।

অন্যরকম অনুভূতি:

ব্রেকআপের পর বন্ধু মহলে এমন অনেক বন্ধু থাকেন বিপরীত লিঙ্গের। যাদের তখন খুব বেশি আপন মনে হয়। মেয়েরা সব সময় চায় তাদের সঙ্গ। কেননা একটা পুরুষ আরেক পুরুষের স্বভাব বুঝতে পারবে ভেবে সে তাকে তার প্রেমিকের সব চাওয়া পাওয়া বা তার নিজস্ব চাওয়া পাওয়া খুলে বলে। সেই একজন বিশেষ বন্ধুর সান্নিধ্যে অনেকেই পুরনো প্রেমিককে অনেক সহজেই ভুলতে পারেন। তবে সেই বন্ধুটির প্রতি হঠাৎ করেই দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। তারপর সেই ভালো লাগা থেকে …................

only.........LOVE

Girl: I’m always here for you.
Boy: I know.
Girl: What’s wrong?
Boy: I like her so much.
Girl: Talk to her.
Boy: I don’t know. She won’t ever like me.
Girl: Don’t say that…you’re amazing.
Boy: I just want her to know how I feel.
Girl: Then tell her.
Boy: She won’t like me.
Girl: How do you know that?
Boy: I can just tell her…
Girl: Well just tell her.
Boy: What should I say?
Girl: Tell her how much you like her.
Boy: I tell her daily.
Girl: What do you mean?
Boy: I’m always with her…I love her.
Girl: I know how you feel. I have the same problem…but he’ll never like me.
Boy: Wait. Who do you like?
Girl: Oh, some boy.
Boy: Oh, she won’t like me either.
Girl: She does.
Boy: How do you know?
Girl: Because who wouldn’t like you?
Boy: You.
Girl: You’re wrong. I love you.
Boy: I love you too.
Girl: So are you going to talk to her?
Boy: I just did

একটি অপ্রকাশিত ভালোবাসা


আমি জীবনে যে ভালবাসিনি এমন না, আমিও একদিন ভালবেসেছিলাম । অনেক ছোট থাকতে। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি । মোটামুটি দুষ্টুও ছিলাম বটে। দুষ্টামি করার সকল উপায় ভালভাবেই জানা ছিল আমার। স্কুল জুড়ে দুষ্টামিতে আমার নাম ছিল হিটলিস্টে। ক্লাস ফাকি আর স্কুল পালানো ছিল আমার খুব পছন্দের। তবে মেয়েদের ব্যাপারে ছিলাম খুবই ভদ্র। এই ধরনের দুষ্টামিতে যখন হচ্ছিলোনা, তখন বন্ধুরা বলল একটা প্রেম কর। তারপর তারা একটা মেয়েও পছন্দ করে দিল। দেখলাম মেয়েটা সত্তিই অনেক সুন্দর।বেশ লম্বা। মেয়েটাকে আমি আগেও অনেকবার দেখেছি, কিন্তু এভাবে কোনদিন ভাবিনি। সেদিন অনেক আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরেছিলাম। দেখলাম সারাদিন শুধু মেয়েটাকে নিয়ে ভাবছি। তখন থেকেই বুঝতে শুরু করলাম ভালবাসা কি। সেদিন রাতে ঘুম একদমই হচ্ছিলনা। পরদিন স্কুলে গেলাম, আর তাকে দেখলাম নতুন করে। মনে হল শুধু এই স্কুলে না, সে যেন পৃথীবিতে সবার চেয়ে সুন্দর। সত্তিই ভালবেসে ফেললাম তাকে। স্কুলে সবসময় তাকিয়ে থাকতাম তার দিকে। তাকে দেখলে আমার বুকে অন্যরকম একটা অনুভুতির সৃষ্টি হতো। নিজের অজান্তেই আমার মুখের কোনে অদ্ভুত একটা হাসি খেলে যেত। খুব ইচ্ছা হতো তাকে আলতো করে একটু ছুঁয়ে দিতে। কিন্তু তার মুখোমুখি হলে তার চোখের দিকে তাকাতে পারতাম না, মাথা নিচু করে ফেলতাম। আমার মনে আছে সেদিন থেকে আমি আর একদিনও স্কুল কামাই করিনি। তখন মনে হতো শুক্রবারেও ক্লাস হলে খুব ভাল হতো। দুষ্টামি একেবারেই ছেড়েদিয়েলাম। দুষ্টামিতে হিটলিস্টে থাকা ছেলেটি হটাৎ এত ভদ্র হয়ে গেলো এটা নজর এড়ালনা কারোরই, এড়ালনা তারও। ভালবাসার কথা সরাসরি বলতে পারলাম না তাকে, অবশ্য আমার অবস্তা দেখে তার একবিন্দুও বুঝতে বাকি ছিলনা, সে বাপারে আমি ছিলাম নিশ্চিত। ব্যাপারটা বললাম ওর এক বান্ধবীর কাছে, যে আমাদের এলাকাই থাকে। ও শুনে হাসল আর বলল সাকিলা সব জানে। সেদিন খুব লজ্জা পেয়েছিলাম আমি। ও দুঃখিত, মেয়েটার নাম সাকিলা। যেহেতু তখন মোবাইলের এত প্রচলন ছিলনা সেহেতু আমাদের ভেতর কথা আদান-প্রদান করে দিত তার ওই বান্ধবী। এভাবে কেটে গেল কিছুদিন, হঠাৎ দেখলাম সে একদিন স্কুলে আসতে দেরি করছে,, ভাবলাম ওতো দেরি করে স্কুলে আসেনা। ওর বাসাটা ছিল স্কুলের পাশেই, চলে গেলাম ওদের বাসার পাশে। ওখানে দেখা হল আমার এক বন্ধুর সাথে, জিজ্ঞেস করলাম শাকিলা দের বাসা কোনটা রে। যে বাসার পাশে দাড়িয়ে ছিলাম আমি জানতাম না ওটাই সাকিলাদের বাসা। সাকিলা জানালা দিয়ে বলল দাড়াও আমি আজ স্যারের সাথে সব বলে দেব। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম কারন আমার আব্বুই স্কুলের হেডমাস্টার । ও যখন স্কুলে আসলো তখন তো ভয়ে আমার অবস্তা খারাপ। আমার অবস্থা দেখে ও হেসে ফেলেছিল সেদিন। কিন্তু ও কিছুই বলল না । আমাদের ব্যপারটা স্কুলে তখনও আমার বন্ধুদের ভেতরই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু জীবনের প্রথম প্রেম তাই নিজেকে আমি আর বেশিদিন কন্ট্রোল রাখতে পারলাম না, সবাইরে বলে বেড়াতাম। কেন জানি খুব আনন্দ লাগত সবাইকে বলতে। কেউ যদি ওর প্রশংসা করত, ওকে সুন্দর বলতো, তাহলে আমার খুব আনন্দ লাগত। অল্প কিছুদিনের মধ্যে জেনে গেল স্কুলের সমস্ত স্যার ম্যাডাম আর ছাত্ররা। আমার ছোট বোনও ওকে খুব পছন্দ করত, একদিন ভাবি বলেও ডেকেছিল। অনেক ভালবাসতাম তাকে, শুধুই বাসতাম না এখনও ভালবাসি আগের মত অনেক অনেক ভালবাসি। ওকে নিয়ে কবিতা লিখতে যেয়ে আব্বুর হাতে ধরাপড়ে মার খেয়েছি একদিন। একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার সাথে ওর সরাসরি এর মধ্যে একটা কথাও বলা হয়নি। দেওয়া হয়নি ১৪ ফেব্রুয়ারিতে একটা ভালবাসার লাল গোলাপ। কখনো সামনে দাড়িয়ে চোখে চোখ রেখে বলতে পারিনি সাকিলা আমি তোমাকে আমার জীবনের চাইতেও বেশি ভালবাসি। আমার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন এখন তোমাকে নিয়ে ঘর বাধা। তবু জানতাম ও আমাকে ভালবাসে। এভাবে ওকে ভালবেসে আমার প্রতিটা দিন সপ্নের মতই সুন্দর কাটছিল। কিন্তু ভালবাসা সবার জন্য না এই সত্যটা প্রমানিত করার জন্য বাস্তবতা আমার এতদিনের সাজানো সপ্নকে এক রাত্রেই ভেঙ্গে দিল। আমাকে করে দিল খুব একা । প্রতি বৃহস্পতিবারের মত কোন এক বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফেরার সময় হলো মন খারাপ যে তাকে একটা দিন দেখতে পারবনা। শনিবার স্কুলে গেলে কিছু মেয়ে আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললো সাকিলা বিয়ে করলো আমাদের একটু জানালও না। আমি শুনে অস্তির হয়ে গেলাম। কি করব ভাবতে পারলাম না। পরে যখন জানতে পারলাম এটা সত্যি !!!!!!! তখন মনে হল আমি অনেক চেষ্টা করেও কথা বলতে পারছিনা। ঠিক ঐদিনই খেয়েছিলাম জীবনের প্রথম সিগারেট। তারপর এমনও সময় গেছে একটানা ৪-৫ দিন সূর্যের আলো দেখিনি। একাকী একটা ঘরে তাকে নিয়ে আমার লিখা কবিতা গুলো পড়তাম। কারও সাথে মিশতাম না, সবসময় একা থাকতাম। অবশ্য এর জন্য তার কোন দোষ নেই। ওইদিন তার ফুফুকে দেখতে এসে তাকে পছন্দ করে ফেলে বরপক্ষ। ঘটনাক্রমে তার আব্বুও রাজি হয়ে যাই। শুনেছি সে নাকি অনেক কেঁদেছিল ওইদিন, কিন্তু কেও শোনেনি তার ওই কান্না। অবশ্য প্রতিবেশীরা অনেক বুঝিয়েছিল তার আব্বুকে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। শুনেছিলাম ছেলেটা খুব ভাল পরিবারের এবং ভাল একটা চাকরী করে। তায়ই হয়তো সুযোগটা হাতছাড়া করেনি। তবে ও ঠিকই ভালবেসেছিল আমাকে। ওর বিয়ের তিনদিন পর আমাকে অবাক করেদিয়ে ও স্কুলে এসে আমাকে ডেকে পাঠাল একটা ক্লাস রুমে, আমি যেয়ে দেখি শুধু ও আর ওর বান্ধবী। আমরা তিনজনই চুপকরে আছি, হঠাৎ ও বলল আমি একেবারে চলেএসেছি আমাকে বিয়ে করতে পারবে??? আমি এই কথাটার কোন সঠিক উত্তর খুজে পেলাম না। নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম না। নিজের কণ্ঠস্বর শুনে নিজেই চমকে উঠেছিলাম সেদিন। যাকে এত ভালবাসি তাকে এভাবে ফিরিয়ে দিলাম!!!!!!!! না কথাটা বলেই মাথাটা নিচু করে নিয়েছিলাম। একদিকে আমার চোখের জল যেন না দেখতে পায়, আর তার সামনে মাথা উঁচু করার মত সাহস সেদিন আমার ছিলনা, তাই সেদিন আমার না শুনে তার মুখের অবস্থা কেমন হয়েছিলো সেটা দেখতে পারিনি। জানিনা সেদিন সে আমাকে ভুলবুঝেছিল কিনা???? তবে তাকে সেদিন না বলার কারন, তার আগে এক যাইগায় বিয়ে হওয়াটা না। তখন আমি সবেমাত্র নাইনে পড়তাম, তখন আমি যদি তার কথায় রাজি হয়ে তাকে কথা দিতাম, আর যদি সে আমার দেওয়া কথাতে বুক বেধে আমার জন্য অপেক্ষা করত, তখন ওটা আরও খারাপ হতো। হয়তো আমার ছোটবেলাই না বুঝে দেওয়া কথাটার কোন মূল্য দিতনা এই সমাজ, আমার পরিবার। তারপর সে আর ফিরে যায়না তার স্বামীর কাছে। আমাদের স্কুলেই আবার পড়ালেখা করতে থাকে। দেখতে দেখতে কেটেযাই আরও অনেকদিন। প্রচণ্ড ইচ্ছা থাকা সত্তেও লজ্জায় আর আগের মতোকরে তাকাতে পারিনি তার ওই সুন্দর মুখটির দিকে। যে মুখের দিকে তাকালে একদিন আমার হৃদয় ভরে যেত। তারপর থেকে লুকিয়ে সেই মুখের দিকে তাকালে কষ্টে হৃদয়টা বের হয়ে আসতো, অদ্ভুত হাসির বদলে লাল হয়ে যেত দুই চোখ। বিষয়টা এখানেই থেমে থাকেনি। যেহেতু আমার আব্বু ছিল হেডমাস্টার সেহেতু আমার জন্যই তাকে স্কুলটা ছেড়ে পাশের একটা স্কুলে ভর্তি হতে হয়। তারপর থেকে আর কোন মেয়ের এমনকি কোন ছেলের সাথে আর বন্ধুত্ব করিনি। একা থাকতে পছন্দ করতাম একা একা ঘুরতাম। কারো সাথে মিশতাম না। অধিকাংশ সময় একা বিছানাই শুয়ে তারে নিয়ে লিখা কবিতা গুলো পড়তাম। আমার রুমে আর কাওকে ঢুকতে দিতাম না। মাধ্যমিক পাশ করে একটা কলেজে ভর্তি হলাম। সেখানে শিরিন নামের একটা মেয়েকে ভাললাগলো, কিন্তু ভালবাসতে ভয় পেতাম। অল্পকিছুদিনের মধ্যে মেয়েটা বুঝেগেল ব্যপারটা। হলো বন্ধুত্ত তারপর ভালবাসা। কিন্তু সাকিলার জাইগাটা অন্যকেও দখল করবে এটা মেনেনিতে পারিনি আমি। অবশ্য শিরিন আমাদের ভালবাসাটা গড়াতে গড়াতে অনেকদূর নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি কোনদিনই তাকে সাকিলার যাইগায় বসাতে পারিনি। নিজের হাতে নষ্ট করেছি আরেকটি ভালবাসা। এখন অবশ্য নিজেকে অনেকটা কন্ট্রোল করতে শিখেছি। নতুন করে কষ্ট পাওয়ার ভয়ে আর কোনদিন কাওকে ভালবাসতে পারিনি। তবুও এখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে আমাকে ভুল বুঝে ভুলে যেওনা সাকিলা, আমি এখনও তোমাকে আগের মত ভালবাসি। পাঁচবছর পর হটৎ দুইমাস আগে দেখা হয়ে গিয়েছিল ওর সাথে, কথাও হয়েছিল কয়েকটা। বুঝলাম এখনও ভালবাসে আমায়। কিন্তু কতটা সেটা বুঝার মত ক্ষমতা আমার মত অপরাধীর নেই। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো তখন। আমি সত্যিই অপরাধী, তা নাহলে এমন একটা নিস্পাপ ভালবাসা থাকতে অন্যকোথাও সম্পর্ক করি কিভাবে। আমাকে ক্ষমা করে দিও সাকিলা। ভাল থেকো।।। আর জেনে রেখ আমি এখনও তোমাকে সেই নাইনে পড়া তাসিন এর মতই ভালবাসি। সে পরে বিয়ে করেছে কিনা???? না সে এখনও বিয়ে করেনি জানি না    ............!!!!!

Deleted Girlfreind

তোমাকে Delete করার চেষ্টার শেষ ছিল না আমার...

তোমাকে Delete করার চেষ্টার শেষ ছিল না আমার...

*ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে -----------------> Deleted !
*ইয়াহু আইডি থেকে ---------------------------> Deleted !
*ফোনবুক থেকে তোমার নাম্বার--------------> Deleted !
*ল্যাপটপ থেকে ছবিগুলো ----------------------> Deleted !
*তোমার জন্য লেখা সব গান-কবিতা -----------> Deleted !

*মন (♥) থেকে --------------------------------> Delete --->> ERROR !!! ='(

তোমাকে ধন্যবাদ............।।

মেয়েঃআমি যদি পড়ে যাই তুমি কি আমাকে তুলবে??
ছেলেঃনা!!
মেয়েঃআমি যখন দুঃখ পাব তুমি কি আমার কান্না মুছিয়ে দেবে??
ছেলেঃনাহ!!
মেয়েঃআমাকে দেখতে যদি কখনো খারাপ লাগে তখনোকি আমাকে ভালবাসবে??
ছেলেঃ না!!




 মেয়েঃযাই হোক!! কমপক্ষে সত্য বলার সৎ সাহস তোমার আছে!! এজন্য তোমাকে ধন্যবাদ!!
ছেলেটি তখন মেয়েটিকে কাছে টেনে নিয়ে বললঃ
আমি তোমাকে পড়ার পর তুলবো না!! কারন, আমি তোমাকে পড়ার আগেই ধরে ফেলব!!
আমি তোমার দুঃখের কান্না মুছে দিবো না!! কারন, আমি তোমার কাছে কোন দুঃখকে আসতে দেবো না!! ♥♥
যখন তোমাকে দেখতে খারাপ লাগে তোমাকে সে সময় ভালবাসব না!! কারন ওই সময় আমার কখনোই আসবে না,তুমি সব সময় আমার কাছে সুন্দর!! ♥♥♥
আমি তোমাকে অন্য সব কিছুর চেয়ে ভালোবাসি!! সবসময় এবং সর্বদা!!
** হয়ত কথাগুলো মুখের কথা কিন্তু আসলেই যদি কেউ কাউকে ঠিক এভাবে ভালবাসতে পারে সেটা হবেঅসাধারন...........!!!!!

একটি দুষ্ট ছেলে বনাম মিষ্টি মেয়ে

ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসে ঝিমাচ্ছিল রাতুল।গতরাতে ভোর ৪টায় ঘুমিয়েছে।
মাঝেমাঝে এমনি..অকারণেই রাত জাগতে ইচ্ছা হয়।পাশের রুমে আড্ডা
চলছিল,ল্যাপটপে কোন একটা মুভি দেখছিল সবাই।তার নিজের রুমমেট সোহাগ,মাথা
ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে পড়ছিল..আর সে?


না পড়া,না আড্ডা..একদম কিছুই করছিল না বললে
অবশ্যি ভুল হবে..একটা কবিতার শেষ দুটো লাইন মেলাবার আপ্রান চেষ্টা
করছিল।কখনোবা জানলার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারা চাঁদটাকে দেখছিল..কোন এক
বিচিত্র কারনে বিষন্নতা পেয়ে বসেছিল তাকে।

"জোস্নার নীলে তুমি
স্মৃতিভেজা মন
ভোর ঠেলে জেগে ওঠা
অবুঝ স্বপন
তুমি আছ,তুমি নেই
হয়তো আছ..
এই ভুলে থাকাতেই!"

-বেঞ্চের মধ্যে কি লিখিস এইগুলা?
সোহাগের ডাকে সম্বিত ফিরে পেল রাতুল।মৃদু হেসে বলল,
-কিছুনারে,মাঝেমাঝে শব্দ নিয়ে খেলতে ইচ্ছা করে।
-শব্দ নিয়ে খেলা..সেইটা আবার কি?তোর কথাবার্তায় তো প্রচন্ড কবিভাব দেখা যাচ্ছে!
-আরে ধুত্তোর..আমি কেন কবি হতে যাব?আমি হলাম বিশুদ্ধ ফাঁকিবাজ,আর এইসব হল
আমার এসকেপ রুট!
-তুই ফাঁকিবাজ,না?তাইলে প্রফ এ প্লেইস করছিল কে?তখন কিন্তু তুই কিছুটা
হলেও পড়াশোনা করতি..
-ঐ দেখবি,বড় কোন পরীক্ষা আসলে ঠিকই আবার দরজা-জানলা বন্ধ করে পড়তে বসে যাব।
-বুঝলাম।তা,লেকচারটা অন্তত তোল..
-তোর থেকে ফটোকপি নিয়ে নিব দোস্ত।এখন একটু ঘুমাতে দে..সামনের বেঞ্চে ঐটা কেরে?
-আসাদ।
-ঐ আসাদ,পিঠ টানটান করে সোজা হয়ে বস,তোর আড়ালে বসে আমি একটা মিনি ঘুম দিয়ে নেই..

ঘাড় ফিরিয়ে,ম্যাডামকে দেখিয়ে স্বভাবসুলভ ভঙ্গীতে বলল আসাদ-ক্যান
মামু?লেকচার না তোল একটু চাইয়া চাইয়া দেখবার তো পার।'মাল'টা কিন্তু
জব্বর..বেশী হইলে আমগো ১০বছরের সিনিয়ার হইব।তুমি তো আবার কবিতা লেখ,এইসব
'জিনিস' মিস করলে কি..

চট্ করে মাথায় রক্ত ওঠে গেল রাতুলের..-তোর বড় বোনও কিন্তু উনার বয়সেরই
হবে।এতোসব সুন্দর সম্বোধন কি উনার সামনেই করিস,না এভাবে..আড়ালে?
-শালা,তুই আমার বোনরে নিয়া..
-ও...নিজের বোনরে নিয়ে কিচ্ছু বললে তখন গায়ে লাগে।না?
রাতুলের গলার আওয়াজ বোধয় একটু বেশীই বেড়ে গিয়েছিল।ম্যাডাম দাঁড়া
করালেন.."এই ছেলে,তুমি ক্লাসে বসে এভাবে চিত্‍কার করে করে কি
বলছিলে?চুপচাপ ক্লাস করবা আর ভাল না লাগলে চলে যাবা।ব্যাস.."
তখনো রাগে হাত পা কাঁপছে রাতুলের..স্রেফ মাথা নীচু করে বলল"আপনার ক্লাস
আমাদের অনেক ভাল লাগে ম্যাম..কিন্তু আজকের জন্য-I am sorry"তারপর ব্যাগটা
নিয়ে নিঃশব্দে বেড়িয়ে এল কতগুলো অবাক চোখের সামনে দিয়ে।


¤¤এখন গন্তব্য ক্যান্টিন।মাথা ঠান্ডা করার জন্য ২কাপ স্ট্রং কফি চাই
তার..এক্ষুনি।নিজের রাগ সম্বন্ধে ভালই জানে সে।একবার আউটবার্স্ট করলে
যথেষ্ট সময় লাগে নরমাল হতে..প্রতিবার ভাবে এভাবে মাথা গরম করবেনা,কিন্তু
চোখে অন্যায় ঠেকলে চুপ করে খাকতেও তো পারেনা।অনেকে বলে,বেশী ট্যালেন্ট
তো,তাই ভাব মারে।কিসের ট্যালেন্ট!কয়েকবার প্লেইস করে,ছন্দছাড়া ২/১টা
কবিতা লিখে আর ভাঙা গলায় গীটার হাতে স্টেজে উঠে গিয়েই নিজেকে সুপেরিয়র
ভাববে?-এতোটা বোকাও নয় রাতুল!
মুডি,খ্যাপা,পার্ট নেয়..এতোসব খেতাব তার!আসলেই কি সে এমন?মাঝেমাঝে
নিজেকে,নিজের জীবনটাকে বড্ড অগোছাল মনে হয়..মনে হয়,নিজেকে সামলানো আদৌ
তার কম্ম নয়।অলস ভাবনায় জর্জরিত বিষন্নপুরীটা তেড়ে আসে যেন-বন্ধ জানলাটা
খোলা আকাশ খোঁজে।ভীষণ একা আর মুডি-মনটা হাঁসফাঁস করে।মন চায়..
কেউ তাকে ভালোবাসুক..


¤¤"ভাইয়া ট্যাকা দেন"-শার্টের হাতা ধরে ঝুলে আছে জামাল।বয়স ৭/৮,তাদের
ক্যান্টিনের আশেপাশেই ঘুরঘুর করে সারাখন,স্টুডেন্টদের কাছে টাকা
চায়,ছেলেমেয়েরা দেয়ও..সবসময় দেখতে দেখতে এই ক্যাম্পাসেরই একটা অংশ হয়ে
গেছে যেন।কিন্তু এভাবে টাকা দেয়ার ব্যাপারটা চরম অপছন্দ রাতুলের-ছোটবেলা
থেকেই ভিক্ষা করা শিখে গেলে,বড় হয়েও হয় ভিক্ষা করবে,নয়তো
চুরি-ডাকাতি..একদিন জিজ্ঞেস করেছিল-এই তোর বাবা কি করে রে?
-হাসপাতাল গেইটে ভিক্ষা করে।
-বাহ বাহ,ফ্যামিলি বিজনেস দেখা যাচ্ছে!শোন তুই এবার একটু অন্য লাইনে
চল,তোকে ইস্কুলে ভর্তি করায়ে দিই।পয়সা লাগবেনা,চল..
একগাল হাসিমুখে জামালের উত্তর ছিল-ইস্কুল ভাল্লাগেনা ভাইজান,তয় ভিক্ষা
করতে ভাল্লাগে...

আজো শার্টের কোণা ধরে অলমোস্ট ঝুলে আছে জামাল,মুখে হাসি -দেননা ট্যাকা..
-এক চড়ে তোর সব দাঁত ফেলে দিব শয়তান ছেলে..পড়াশোনা করবেনা,ভিক্ষা
করবে..টাকা দেন..মামাবাড়ীর আবদার আরকি,আর কোনদিন যদি তোরে দেখসি এই
ক্যাম্পাসে..

রাতুলের চিত্‍কারে আশেপাশের সবাই ঘুরে ঘুরে তাকাচ্ছিল।জামাল চোখ বড় বড়
করে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে,এক ছুটে পালাল..
সম্বিত ফিরে পেল রাতুল..এতো রিঅ্যাক্ট করার কি দরকার ছিল?এদ্দুর একটা
ছেলে..টাকা নাই বলেই তো কাটিয়ে দিতে পারত।বিরক্ত মুখে ক্যান্টিনে গিয়ে
বসল ও।যোহরের নামাযটা বোধয় ক্বাযা হয়ে যাবে..পারতোপক্ষে নামায ক্বাযা
করেনা ও।কিন্তু আজ?দিনটাই কেমন যেন উল্টাপুল্টা যাচ্ছে।একটা কফির অর্ডার
দিয়ে কপালে ৪/৫টা ভাঁজ ঝুলিয়ে,পকেট থেকে মোবাইলটা বের করল..ফোন সাইলেন্ট
ছিল..৫টা মিসডকল..অপরিচিত নাম্বার।কলব্যাক করতে গিয়েও করলনা।
গত অক্টোবর থেকে ক্লাস নেয় একটা কোচিংএ..১মাসের মধ্যেই উল্টাপাল্টা কল
আসা শুরু হল-"ভাইয়া,মেডিকেলে ভর্তির কিছু টিপস দেননা..ভাইয়া,আপনার সাথে
ফ্রেন্ডশিপ করব..ভাইয়া,আপনি নাকি সিঙ্গেল.."চারপাশ থেকে ফিকফিক হাসির
শব্দ..
আগে ভাবতো,শুধু ছেলেরাই ফোনে মেয়েদের ডিসটার্ব করে।কিন্তু না..কেউই আর
কারো চেয়ে পিছায়ে নাই আজকাল!


¤¤রাতের ঘুমটা বিকালে পুষিয়ে নেয়ার বৃথা চেষ্টায় ছিল,আবার আসল সেই
কল..কাঁচা ঘুম ভেঙে যাওয়ায় রেগেমেগে ফোন অফ করে শুয়ে পড়ল রাতুল।তারপর
সন্ধায়,মাগরিবের নামাযের সময়-আবার..ধরতে যাবে,গেল কেটে..কি মুশকিল!!

রাতে সে নিজেই ফোন করল,অন্য নাম্বার থেকে।ওপাশে একটা মেয়ে কন্ঠ -হ্যালো..
রাতুল -এটা কার নাম্বার জানতে পারি?
-আশ্চর্য আপনি ফোন করছেন,আপনি জানেন না যে কাকে..
কথা বন্ধ।এক সেকেন্ড নিরবতা।তারপরই লাইনটা কেটে গেল।
"আজব মুসিবতে পড়লাম।কে এইটা!!"-আপনমনে বিড়বিড় করল রাতুল।



¤¤-Happy Valentine's Day..
অবশেষে,রাত ১২টায় কথা বলে উঠল সেই অপরিচিতা।
তিরীক্ষি মেজাজে কথা শুরু করল রাতুল-কে আপনি??
আজকে সকাল থেকে কল দিয়ে যাচ্ছেন।ধরতে গেলে কেটে দেন..পরিচয় জানতে চাইলে
কেটে দেন..আগে নিজে decide করেন,কথা বলতে চান কি চাননা।
আমতা আমতা করে জবাব আসল ওপাশ থেকে-সন্ধায় কল করছিলাম..তখন আযান পড়ল..পরে
আবার আপনি অন্য নাম্বার থেকে কল করলেন..তখন..
-ও আচ্ছা,আপনি আমার ভয়েসও চেনেন..
-না,মানে..
-কে আপনি?কি জন্য ফোন করছেন?চটপট বলেন..ফালতু কথা বলার সময় আমার একদম নাই।
-দেখেন,আমি আসলে আমার পরিচয়টা বলতে চাচ্ছিনা।শুধু কয়েকটা কথা বলেই রেখে
দিব।আপনি একটু সিরিয়াসলি শুনেন..
-সিরিয়াসলিই কিন্তু মানুষ এই ফাজলামী গুলা করে।এই যে আপনার মত
মেয়েরা..নাকি তুমি বলব,কোন ক্লাসে পড় তুমি?পড়াশোনা ফেলে,রাত দুপুরে
মানুষকে ডিসটার্ব করতে খুব ভাল লাগে..না?
-দেখেন্,আপনি আমার কথাটা শুনেন..
-শোন মেয়ে,অচেনা মেয়েদের সাথে ফোনে ফ্রেন্ডশীপ..আর লুতুপুতু টাইপ কথা বলা
বা শোনা,কোনটারই ইচ্ছা আমার নাই।আমি সিওর ওইখানে আরো কয়েকজন বসে আছে-আমার
প্রতিটা কথা নিয়ে গবেষনা হচ্ছে..হাসাহাসি হচ্ছে..
-আশ্চর্য!কিছু না বুঝেই আপনি শুধু চিত্‍কার করে যাচ্ছেন..
-হ্যাঁ আমি এমনই।rude,moody..so called 'friendship' করার মত
কেউনা..এতোক্ষনে নিশ্চই বুঝে গেছেন।আর আপনাদের মত থার্ড ক্লাস মেয়েদের
সাথে তো...
-অন্নেক বলেছেন...
এইবার চুপ করেন।আমি থার্ড ক্লাস..কি দেখে বুঝলেন আপনি?কয়েকবার ফোন করেছি
বলে..আপনি মাগরিবের নামায পড়বেন,তাই ফোন রেখে দিয়েছি বলে..নাকি unknown
নাম্বারে হঠাত্‍ আপনার ভয়েস শুনে নার্ভাস হয়ে গেছি বলে?হ্যাঁ,আমি নার্ভাস
ছিলাম-কারণ...কারণ আমি আপনাকে ভালোবাসি।
গত দুই বছর ধরে।যেদিন প্রথম এই ক্যাম্পাসে এসছি সেইদিন থেকে..love at
first sight এ আমি বিশ্বাস করিনা,তবুও সেটা ফীল্ করেছি..প্রোগ্রামে গাওয়া
আপনার প্রতিটা গান রেকর্ড করে প্রতিদিন শুনেছি।
আর..আর জামালকে প্রতি শুক্রবার ক্যান্টিন থেকে যে পোলাও কোর্মা খাওয়ানো
হয়,তার টাকা কে দেয় সেটাও জানা আছে আমার..
এক নিঃশ্বাসে বলে গেল মেয়েটা।
-আমি..
-হ্যাঁ আপনি আপনার ১বছর জুনিয়ার থার্ড ক্লাস এই মেয়েটাকে চিনে ফেলতে
পারেন ভেবে পরিচয় দিতে চাচ্ছিলাম না।এই সিমটা আজই কিনে এনেছি..নিজের সাথে
যুদ্ধ করে..পরিচয় লুকিয়ে হলেও আপনাকে জানাতে চেয়েছিলাম-একটা বোকা মেয়ে
কোন এক বিচিত্র কারণে প্রায় রাতেই আপনাকে স্বপ্নে দেখে।আপনি তার হাত ধরে
আছেন..গল্প করছেন-এইসব দেখে...আমি না আসলেই থার্ড ক্লাস!বাসা থেকে বিয়ের
চাপ আসায় বাধ্য হয়ে,এমন হতে হয়েছে আমাকে।শেষ জীবনে যেন আপসোস করতে
নাহয়-আমার ভালোবাসাকে একটিবারের জন্যেও সুযোগ দেইনি আমি..শুধু সেই
গ্লানিটুকু মুছে ফেলার জন্য আজ থার্ড ক্লাস হয়েছি।..আপনি কি বোঝেন-একটা
ইন্ট্রোভার্ট,বোকাসোকা আর ঘোমটার আড়ালে থাকা মেয়েকে কতটা সাহস সঞ্চয়
করে..নিজের সাথে কতটা যুদ্ধ করে,আগ বাড়িয়ে বলতে হয়-
'Happy Valentine's Day'..
-আ..আমি আসলে..
-হয়তো আপনি অনেক বড় মাপের,মাল্টিট্যালেন্টেড একটা ছেলে-কিন্তু ভালোবাসা
না হোক,ভাল ব্যবহারটা অন্তত শিখে নেবেন।

লাইনটা কেটে গেল..একটু পর,কল করল রাতুল।কিন্তু..switched off.


¤¤পরদিন,১৪ফেব্রুয়ারী..কলেজ ক্যান্টিন..

-মামা,সিঙ্গারা আর চা..কত হইছে..সিঙ্গারায় এতো তেল দেন কেন মামা? আরে জামাল..
-আপামনি,টাকা দেন..
হাসিমুখে হাত বাড়ায় জামাল।
-টাকা তো দেয়া যাবেনা..এইটা নাও।
-এইটা কি?
-বাংলা বর্ণমালার বই।
-ইস্কুল যামুনাতো..
-যাইসনা..আগে আমার কাছে পড়্..এই বইটা না অন্নেক মজার..দেখ্ কত রং,কত
সুন্দর সুন্দর ছবি..সুন্দর না?
-হু..
দুইহাতে বইটা আগলে ধরে জামাল..
-শোন্,মাঝেমাঝে ক্যান্টিনে বসবি আমার সাথে..দেখবি..গল্প করতে করতে কত্ত
কিছু শিখে গেছিস।আর যেদিন পড়তে ভাল্লাগবেনা সেদিন চকলেট খেয়ে ছুটি!কিরে
পড়বিনা?
-আইচ্ছা..

জামালের হাসি হাসি মুখ ছাপিয়ে রাতুলের চোখ এখন পাশে দাঁড়ানো মেয়েটার
দিকে।ক্যান্টিনের এক কোনায় বসে বসে এতোক্ষণ এই দুজনের কথাই শুনছিল সে,কান
খাড়া করে!ওরা দেখেনি ওকে..
গলার আওয়াজটা এতো চেনা চেনা..তাহলে কি?..
কি যেন হয়ে গেল রাতুলের..উঠে দাঁড়ালো,জিজ্ঞেস করবে।ভুল হলে ভুল..

রাতুল আসছে..মেয়েটা দেখল।নিমিষে এক্সপ্রেসন চেন্জড..মুখটা সাদা হয়ে
গেছে..দুই পা পিছিয়ে গেল মেয়েটা..ব্যাগ থেকে টাকা বের করছে,হাত
কাঁপছে..দেখে মুচকি হাসল রাতুল..নার্ভাস!..
তারপর সোজা ওর সামনে গিয়ে বলল-
Happy Valentine's Day!
-জ্বী..?
-আমি একটা থার্ড ক্লাস আর বদমেজাজী ছেলে।আমার সাথে এক কাপ কফি খাবেন?
-মা..মানে?
একটুসময় চুপ করে থেকে বলল রাতুল-কি..এখনো নার্ভাস?..


রাতুলের চোখেমুথে দুষ্টুমী..চোখ তুলল অপরিচিতা..আর ছোট্ট ঘোমটার আড়ালে
লাজুক মুখটায় কোথা থেকে উঁকি দিয়ে গেল একটা মিষ্টি হাসি.............।

ঝগড়া দিয়ে প্রেম... মাধ্যম একটি গোলাপি ছাতা

          নীলক্ষেতের মোরে রিক্সা থেকে নামতেই ভিজে চুপসে গেলাম, মাথা ও শরীরে আকাশ হতে নিক্ষিপ্ত বরফের অত্যাচার। এ তো ভয়ংকর বৃষ্টিরে বাবা। মোবাইলটা কোনও মতে পকেটে চালান দিয়ে ভোঁ দৌড় মারলাম, গন্তব্য সামনের দোকান গুলোর কোনও চিপা, যার উপর দিয়ে ওই মেঘঘন আকাশটা দেখা যায় না। দৌড়াচ্ছি আর আশেপাশের চিপাগুলো দেখছি, মানুষে টাঁসা, শালা এই দেশের জনসংখ্যা এতো বেশি কেন, ছোটবেলায় পড়েছিলাম...


বিনোদনের যথেষ্ট উপকরন না থাকায় যৌনতাই বিনোদনের উপলক্ষ, কিন্তু এখনতো বিনোদনের অভাব নাই, তাও জনসংখ্যা এতো বেশি কেন? ব্লগে এর উপর ব্যাপক একটা লেখা লিখতে হবে, তার আগে নিজেরে বাচাইতে হবে। একটা দোকানে কিছুটা হালকা অবস্থা মনে হচ্ছে, ওই দিকেই যাই... বাকিটা উপরয়ালার কৃপা।

- এই সরে দাঁড়ান,...... স্টুপিড।

ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকালাম, মোটা কাল ফ্রেমের চশমার ভিতর দিয়ে একজোড়া সরল চোখ, ঠোঁট গুলো রাগে কাঁপছে, গালে হালকা টমেটো মার্কা লালচে চোপ।

- অ্যান্টি কোনও সমস্যা??
- এই ফাজিল ছেলে, আমি দেখতে তোর অ্যান্টির মতো?
- হুম, কি সমস্যা অ্যান্টি?
- আরে বেয়াদপ তো, অ্যান্টি অ্যান্টি করছিস কেন? ভিজা শরীরটা সরা নইলে থাপ্পড় খাবি।

একি মেয়েরে বাবা, সরাসরি তুই তুই করছে। মেজাজটা আরও খিঁচরা হয়ে গেল।

- ওই বেটি, আমি তোর ড্রাইভার লাগিযে তুই তুই করছিস?

“আপু কোনও সমস্যা” বলে একজন নারীবাদী এগিয়ে আসলো। তাকাইয়া দেখি বেটা একটা পালোয়ান। সিচুয়েসন প্রতিকূলে।

- আরে দেখুন না, বেয়াদপটা গায়ে পড়ে অভদ্রতা করছে। বললাম, সরে দাঁড়ান... উল্টা আমার সাথে ফাইজলামি করছে। স্টুপিড একটা।
- এই যে ভাই, মেয়ে মানুষ দেখলে মাথা ঠিক থাহে না? দেইখা তো ভদ্র ঘরের পোলা মনে হইতাছে। সইরা দাঁড়ান এহনি, নাইলে সমস্যা আছে। আইজকালকার পোলাপাইন গুলা যে কি পরিমান ফাজিল হইয়া গেছে।
- আপনি নিজের চরকায় তেল দেন, আমি ঢুকতে পারলাম না, শরীর ভিজে গেছে তো দেখতেই পাচ্ছেন, আর একটু পানির ছিটা লাগছে, এতেই উনার আমাকে স্টুপিড বলতে হবে?


যথাসম্ভব কঠিন আর ভারিক্কি একটা লুক নেবার চেষ্টা করলাম। লাভ হইছে বলে মনে হল না। মেয়ে মানুষ দেখলে যে কেউ হিরো সাজবার চেষ্টা করে, আর এতো একটা পালোয়ান... আমার তিনগুন। তাই সরে দাঁড়ালাম আস্তে করে, একটু অনিচ্ছার ভাব নিয়ে। মেয়েটার দিকেও একটা কঠিন লুক চালান দিয়ে দিলাম, ওইখানেও খুব একটা লাভ হইল না। মাছি মারার ভংগিতে আমারে নদীর ওপারে উড়াইয়া দিল। অগত্যা ভিজা শরীর নিয়া হাদারামের মতো ওইখানে অস্বস্তিকর টাইম পাস করতে লাগলাম। হালকা ঠাণ্ডা লাগছে। শরীরটা একটু কাঁপছেও মনে হয়।

বেশ কিছুক্ষণ পরে বৃষ্টি হালকা হয়ে আসলো। বের হয়ে যাবো কিনা ভাবছি, তখন আবার ওই বেটি খেকিয়ে উঠল- “সরে দাঁড়ান, বের হবো।” যাই হোক, তুই থেকে সরাসরি আপনিতে উন্নীত হইছি। মেয়েটা খারাপ না, মেজাজটা একটু গরম মনে হয়। বাপ মনে হয় গ্রাম্য চেয়ারম্যান... এই ধরনের বাপের বেটিরা একটু এই টাইপ হয়। সরে দাঁড়ালাম।


সামনে দিয়া যখন বের হয়ে গেল, নাকে সেই মানের একটা সুবাস পেলাম। আহা, রাগ ধুয়ে মুছে মিঠা পানি হয়ে গেল। ভালো করে একটু দেখলাম, শ্যামল দেশের সাদা মেয়ে... সুন্দরী তো সেটা পাগলেও বলবে।


ঘুরে জায়গা নিয়ে দাড়াতে যাবো, একসাথে অনেক গুলা হাসির শব্দে পেছনে ফিরে তাকালাম... চেয়ারম্যানের বেটি রাস্তায় ময়লা আবর্জনার মাঝে গড়া-গড়ি খাচ্ছে, একটি কলার খোসা পায়ের চাপে ভর্তা হয়ে ঈদের চাঁদের আকার ধারন করে উনার পতনের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। অনেকের সাথে আমিও চেয়ারম্যানের বেটিকে হেল্প করতে এগিয়ে গেলাম। মেয়ে মানুষ, তাই কেউ হাত দিয়ে তুলতে ইতস্তত করছে... আর বেটির চশমা চোখে নাই, সেও বোধ করি কিছুই দেখতে পারতেছে না। অদ্ভুত সিচুয়েসন।


“দেখি, সরেন তো ভাই, সরেন... ওর চশমাটা দেখুন তো কই”... বলে আমি এগিয়ে গেলাম। মায়া লাগলো দেখে, চশমা ছাড়া মনে হয় কিছুই দেখতে পারছে না, আর সাড়া শরীর তো কাঁদায় যাচ্ছে তাই অবস্থা। মানুষ গোল হয়ে নাটক দেখছে... কেউ কেউ তো শরীর দেখার এতো মজার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাচ্ছে না। আমি হাতটা হালকা করে ধরে, মুখটা কানের কাছে নিয়ে বললাম...
- অ্যান্টি... আমি, আপনার স্টুপিড... টেনশন করবেন না, কোথাও লেগেছে?
- নাহ, আমার চশমাটা দেখুন না কোথায় প্লিজ... (কাঁদো কাঁদো কণ্ঠ)


একজন চশমাটা এগিয়ে দিল আমার হাতে, একদিকের ফ্রেম ভেঙ্গে গেছে। চশমাটা ওর হাতে দিয়ে একজনকে একটা রিকশা ডেকে দিতে বললাম। ওর দিকে তাকিয়ে দেখি চশমাটা কোনও রকমে পড়ে বোকা বোকা দৃষ্টিতে চারদিকে তাকাচ্ছে... আমার দিকে তাকিয়ে এমন একটা লুক দিল, ওই দৃষ্টিতে এতো মায়া, আমি কয়েকটা পালস মিস করলাম। আস্তে করে হাতটা ধরে ওকে দাড় করালাম।
- আঘাত পেয়েছেন কোথাও?
- কি জানি, আমার কান্না পাচ্ছে...
- রিকশায় করে বাসায় চলে যান, ড্রেসের বাজে অবস্থা...
- আপনি যাবেন আমার সাথে একটু, প্লিজ...


আমি এমনিতেই যেতে চাচ্ছিলাম মনে মনে, বলাতে মনটা লাফিয়ে উঠল... একসাথে রিক্সায় উঠলাম। মানুষজন আমার আর ওর দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। কেন জানি বুকের কোথাও নতুন কিছু সুর বিভিন্ন তাল আর লয় নিয়ে বাজতে শুরু করল। রিক্সার হুডটা তুলে দিলাম, পলিথিনের কাগজটা দিয়ে বাহিরের জগত থেকে আমরা আলাদা হয়ে গেলাম। সমস্যা একটাই, কাদা-ময়লার অতি মিষ্ট সুবাসে আমি আপ্লুত হয়ে রইলাম।


“ভাইজান যামু কোন জাইগায়?”... রিক্সাওয়ালার কোশ্চেনে আবেগের সুরেলা সঙ্গীতে কিছু বেসুরা টান অনুভব করলাম। আমি কাদাকুমারীর দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি উনার কাজল কাল চোখে মেঘের ঘনঘটা, বর্ষণ এই হল বলে, শুধু একটা দমকা হাওয়ার ধাক্কার অপেক্ষা।


- দেখতাসস না তোর ভাবির বেহাল অবস্থা?... চলতে থাক, উনি এখন কোন জাইগায় যাবে তার মুডে নাই, আগে মুড ঠিক হউক...
- আপনি সবসময় এমন ফাইজলামি করেন কেন?... স্টুপিড।
- যাক, কথা বলছেন তাহলে... খোঁচা কামে লাগছে... এখন কই যাবো, ঠিকানা বলে ফেলেন... চোখে তো মেঘের ঘনঘটা দেখতে পারছি... বর্ষণ শুরু হলে আর বলতে পারবেন না।
- আপনি না যাচ্ছে তাই... এই মামা ইস্কাটনের দিকে চলো।

রিক্সা চলছে মামার ইচ্ছের গতিতে, পলিথিনের চিপায় আমরা দুটি নর-নারী নিশ্চুপ বসে আছি। বিশাল কাহিনীর পর একটা সিগারেট ধরাতে মন চাচ্ছে... কিন্তু বুঝতে পারছি না... পাশে বসা কাদাকুমারী আবার খেকিয়ে উঠবে না তো!! ধুর... “ওই মামা... ওই সিগারেটের দোকানের পাশে একটু রাখেন তো”... চাইলাম না কাদাকুমারীর দিকে... ভয়ে নাকি কেন, জানি না।

- মামা, কোথাও দাঁড়াবেন না, সোজা চলেন... (আমার দিকে তাকিয়ে)... আপনি তো অদ্ভুত লোক... নাম কি আপনার?... কি করেন??
- অদ্ভুত লোকটার নাম আকাশ... কি করি??... ওই ঘুরাঘুরি আর কি...
- হুম... বেকার?
- বেকার বলে লজ্জা দিবেন না... আমরাও মানুষ।

ও হেসে ফেলল। এতো মিষ্টি কাদাময় হাসি। মনটা পুরাই বরফের মতো গলে গেল।

- আপনার নামটা কি জানতে পারি?
- নাম দিয়ে কি করবেন?
- ওমা!!... আপনি জানলেন... আমি জানব না??
- নিশি...


আমি তাকালাম ওর দিকে... নিশি !!!... নিশ্চুপ হয়ে গেলাম আমি। প্রেম আমার চোখে মুখে টলটল করছে। এই আমার সমস্যা... সুন্দরী দেখলেই আমার প্রেম হয়ে যায়। আকাশ গার্ল হওয়ার যে কয়েকজন বিরল দুর্ভাগ্যের অধিকারী হতে পেরেছিল তাদের তালিকায় কাদাকুমারী নিশি কে দেখতে পারলাম না। সেই আশা করেও লাভ নেই।


কখন যে ওর বাসার সামনে চলে আসছি টেরই পাইনি। রিক্সা থেকে নামলাম, ভাড়া দিলাম। তাকালাম ওর দিকে, ক্ষণিকের পরিচয় অথচ কতো চেনা মনে হচ্ছে। আমি একটা উত্তম কুমার টাইপ হাসি দিলাম।
- যান তাহলে, বডি গার্ডের কাজ তো শেষ।
- আপনি কি সব সময় এমন ফান করেন? বাসায় চলুন... মার সাথে কথা বলে পরে যাবেন।
- মার সাথে?... কেন, কি করছি আমি?... দেখুন আমি কিন্তু আপনারে ধাক্কা দিয়ে ফেলেনি...
- আপনার ফাইজলামি শেষ হইছে??..... উপরে তাকিয়ে দেখুন বারান্দা থেকে মা আমাদের দেখছেন। তাই, আপনাকে এখন যেতে হবে এবং সুন্দর করে ঘটনাটা বলতে হবে... এবং অবশ্যই... আপনি যে আমার কেউ না... সেটাও সুন্দর করে বলবেন।


আমি উপরে তাকানোর সাহস না করেই ওর পেছন পেছন গেইট দিয়ে বাসায় ঢুকলাম। দারওয়ান চোখ গোল করে সালাম দিল... আমারে না কাদাকুমারীরে আল্লাহ জানে। পেটের ভিতর শিরা-উপশিরা গুলো কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলা শুরু করে দিছে... আজকে কার মুখ দেখে যে উঠছিলাম... মনে হয় রহিমা বুয়া।


ড্রয়িং রুমে সোফায় বসে বসে আমের জুস খাচ্ছি আর ইন্টারভিউ পর্ব মনে মনে সাজাচ্ছি। “নাম কি তোমার?”... মাথা তুলে প্রশ্নকারীর দিকে তাকিয়ে দেখি মধ্যবয়সী একজন মহিলা। দেখেতে তো সহজ সরল মমতাময়ীই মনে হচ্ছে। দাঁড়িয়ে সালাম দিলাম।
- জী, আকাশ।
- বসো... ভালো নাম কি?
- সাইফুল আমিন আকাশ।
- বাসা কোথায় তোমাদের?
- জী, ময়মনসিংহ।
- হুম... বাবা কি করেন?

- হাই স্কুলের হেডটিচার।
- মা?
- মেডিকেলে চাকরী করেন।
- কয় ভাইবোন?

মহিলার সমস্যা কি??... পুরা বায়োডাটা জিজ্ঞেস করতেসে... আসল কোশ্চেন কখন শুরু হবে সেই অপেক্ষায় আছি...

- জী, দুই ভাই, এক বোন। আমি সবার বড়, তারপর বোন, তারপর আবার ভাই।
- আচ্ছা, কি করো?
- জী, আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার...


“ইঞ্জিনিয়ার??... ” বা দিকে তাকিয়ে দেখি নিশি... নতুন চশমার ভিতর দিয়ে চোখ গুলো যেন বের হয়ে আসছে... ফ্রেশ হয়ে একটা সাদা ড্রেস পড়ছে... পরীর মতো লাগছে...


- নিশি তুই কথা বলবি না, কোথা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করেছো?
- বুয়েট থেকে।
- অনেক ভালো, আচ্ছা, বসো... তোমরা কোথা বল... দুপুরে খেয়ে যাবে এখানে।
- জী... না... আমি বাইরে খেয়ে নিতে পারবো।
- খেয়ে যাবে... বললাম না। বসো...

নিশির দিকে তাকালাম... মুখে দুষ্টামি হাসি। পুরাই অস্বস্তিকর সিচুয়েশনে পড়লাম...

- আপনি না বেকার?
- আমি তো বলি নাই, আপনিই তো বললেন... আমি শুধু বলছি... বেকার বলে লজ্জা দিবেন না... আমরাও মানুষ।
- হুম... আপনি ফাইজলামির ওস্তাদ... বুঝা উচিত ছিল।

অনেক কথা হয়। আমি আপনি থেকে তুমিতে নেমে গেলাম... নিশি আমার থেকে চার বছরের ছোট... ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে মার্কেটিং এ পড়ছে... থার্ড ইয়ার। হাসা-হাসি, ফাইজলামি চলতে লাগলো আমার... ভালই হইছে... বাইরে আবার যে বৃষ্টি শুরু হইছে... সময়টা খারাপ কাটছে না। দুই দিনের ছুটির প্রথম দিনটা ভালই কাটছে। নিশির মার রান্নার হাত চরম। এই বাসায় ঘর জামাই হইতে পারলে ভালো হইত।


বিদায় বেলা আসন্ন। অ্যান্টিকে খাওয়ানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ দিলাম। নিশির দিকে তাকিয়ে একটু হাসলাম।

- যাই তাহলে... অনেক ভালো একটা দিন কাটল আমার... মনে হয় লাইফের বেস্ট। যে কারনে বাসায় ঢুকলাম, সেই বিষয়ে অ্যান্টি কোনও কোশ্চেনই জিজ্ঞেস করে নাই। ভালই হইছে... আমি যে তোমার কেউ না... সেটা অ্যান্টি দেখেই বুঝচ্ছে... তাই জিজ্ঞেস করেন নাই।
- তাই??...... আপনার তাই মনে হইছে... আপনাকে ভালো লাগছে... তাই কিছু বলে নাই... মার তো ধারনা আপনার সাথে আমি চুটিয়ে প্রেম করছি... আমাকে বলছে... এতো ভালো ছেলের সাথে তোর পরিচয়... বলিসনি কেন?...


হৃদয়ে বিজলিপাত হল একটা... প্রচণ্ড ভোল্টেজে আমি স্থির হয়ে তাকিয়ে থাকলাম নিশির দিকে। ওই দৃষ্টিতে কি ছিল জানি না... নিশি চোখ নামিয়ে নিল... হাতের নখ খুঁটতে লাগলো। আমি বুঝতেসি কিছু বলতে চাইলে এটাই সময়... কিন্তু কিছুই মাথায় আসতেছে না। কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে বললাম...
- একটা ছাতা দিবা, মনে হয় বৃষ্টি হবে... পরে আবার দিয়ে যাবো...


নিশি মুখ তুলে তাকালো... খিল খিল করে হাসি দিল... আমি গলে গেলাম... গলা শুখিয়ে কাঠ হয়ে গেলো...


আমি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছি... নিশি ভিতরে গেছে ছাতা আনতে... অনন্তকালের অপেক্ষার পর আবার নিশির মূর্তি দেখা গেলো... হাতে একটা গোলাপি ছাতা...
- এটা আমার ছাতা... অনেক পছন্দের... আপনাকে দিচ্ছি... কিন্তু আপনি যে ধরনের মানুষ... এর যত্ন নিতে পারবেন না, আপনার মোবাইলটা দেখি...


আমি মোবাইলটা ওর হাতে দিলাম... কি যেন করল... তারপর ফিরিয়ে দিয়ে বলল...
- ছাতার মালিকের নম্বর আছে ওখানে... ইচ্ছে থাকলে আপনি তাঁকে কল করতে পারেন।


আমি রাস্তা ধরে হাঁটছি... ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে... হাতে একটি গোলাপি ছাতা... পৃথিবীটা অনেক সুন্দর।
HM Sourov